@extends('layouts.app') @section('content')

খুলনা জেলা পুলিশের ইতিহাসঃ
১৮৩৬ সালে খুলনা শহরের পূর্বপারে নয়াবাদ নামক স্থানে থানা গঠনের মাধ্যমে এ অঞ্চলে মূলত পুলিশি কার্যক্রম শুরু হয়। পরবর্তীতে ১৮৪২ সালে খুলনা বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির ১ম মহকুমা হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ১৮৮২ সালে খুলনা, বাগেরহাট এবং ২৪ পরগণা জেলার সাতক্ষীরা মহকুমা নিয়ে খুলনা জেলা গঠন হয়। ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর প্রাক্তন সদস্য মি. রেনী সাহেব ও তার স্ত্রী ১৮২৯ সালে খুলনার পূর্বপারে নীল চাষের উদ্দেশ্যে তালিমপুরে একটি সুরম্য কুঠিবাড়ি নির্মাণ করে বসবাস শুরু করেন। নীল চাষ করতে গিয়ে তারা এলাকার সাধারণ মানুষকে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করতেন। নীল চাষের সুবিধার জন্য একটি লাঠিয়াল বাহিনী গঠন করা হয়। এই সময়ে পাশর্^বর্তী শ্রীরামপুরে শিবনাথ ঘোষ নামে একজন প্রভাবশালী জমিদার বসবাস করতেন। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে জমিদার শিবনাথ ও মি. রেনী সাহেবের লাঠিয়াল বাহিনীর মধ্যে প্রায়শই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতে থাকে। সংঘর্ষে একাধিক হত্যাকা-ের ঘটনা সংঘটিত হয়। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে খুলনার পূর্ব পারে নয়াবাদ নামক স্থানে একটি থানা স্থাপন করা হয়। প্রাপ্ত তথ্যমতে এটাই এ অঞ্চলের প্রথম থানা। ১৮৪২ সালে খুলনাকে মহকুমা ঘোষণার পর নয়াবাদ থানা খুলনা সদরে স্থানান্তর হয়ে মহকুমা পুলিশে রূপান্তরিত হয়। ১৮৮২ সালে খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা মহকুমাকে নিয়ে খুলনা জেলা গঠিত হয়। সেখান থেকে শুরু হয় খুলনা জেলা পুলিশের যাত্রা। বর্তমানে খুলনা জেলায় মোট ০৯ টি থানা আছে। ১৯৮৬ সালে খুলনা জেলা পুলিশের আওতাধীন খুলনা থানাসহ মোট ০৫ টি থানা নিয়ে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ গঠিত হয়।

প্রতিষ্ঠা থেকে অদ্যাবধি উল্লেযোগ্য ঘটনাবলীঃ
১। ১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ কালরাত্রিতে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী প্রথমেই রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে ভারী অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। পুলিশ সদস্যরা জীবন বাজি রেখে পকিস্তানী বাহিনীর সশস্ত্র হামলার মোকাবেলা করেন। এসময় অনেক পুলিশ সদস্য দেশের জন্য আতাœাহুতি দেন। এ সংবাদ দেশের সকল পুলিশ ইউনিটে ছড়িয়ে পড়লে অন্যান্য জেলার ন্যয় খুলনা জেলা পুলিশও স্বাধীনতা যুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে।
২। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর জাসদ গণবাহিনী গঠন করে অন্যান্য জেলার ন্যায় খুলনা জেলাতেও সরকার বিরোধী বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা শুরু করে। জাসদের সরকার বিরোধী এসব কার্যক্রম খুলনা জেলা পুলিশ দক্ষতার সাথে মোকাবেলা করে।
৩। ১৯৯০ এর দশক হতে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে সর্বহারা, পূর্ব-বাংলা কমিউনিস্ট পার্টি, বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টি ইত্যাদি নামে বিভিন্ন পার্টি গঠন করে তারা খুন, ধর্ষণ,চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধকর্মে লিপ্ত হয়। বিশেষ করে খুলনা জেলার ডুমুরিয়া, ফুলতলা, রুপসা থানা এলাকা ক্রমান্বয়ে সর্বহারাদের অভয়ারণ্যে পরিনত হয়। সর্বহারা দমনে বাংলাদেশ সরকারের দৃঢ় মনোভাব পোষণ করার ফলে খুলনা জেলা পুলিশ সর্বশক্তি দিয়ে সর্বহারা দমনে তৎপর হয়। খুলনা জেলা পুলিশের দীর্ঘ প্রচেষ্টার ফলে খুলনা জেলার সর্বহারা অধ্যুষিত এলাকায় বর্তমানে শান্তির সু-বাতাস বইছে ।

ইউনিটের বিশেষ কৃতিত্বঃ
১। সুন্দরবন এলাকায় জলদস্যু, বনদস্যু, বিষ দিয়ে অবৈধভাবে মৎস্য শিকার, বিভিন্ন ধরনের বৃক্ষ নিধন, বন্যপ্রাণী নিধন ও চোরাচালানসহ বিভিন্ন প্রকার অপরাধ সংগঠিত হয়ে থাকে। খুলনা জেলা পুলিশ এবং অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর যুগপৎ অভিযান পরিচালনার ফলে দাকোপ, পাইকগাছা ও কয়রা থানা এলাকায় বর্তমানে স্বাভাবিক অবস্থা বিরাজ করছে। এসব অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি করাসহ তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
২। সড়কের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে খুলনা জেলা পুলিশ বিভিন্ন রকমের প্রচার-প্রচারনা চালিয়ে নিয়মিত জনগনকে সচেতন করে যাচ্ছে যার ফলস্বরুপ খুলনাস্থ বিভিন্ন সড়কের দূর্ঘটনার হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমে এসেছে।
৩। মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করে খুলনা জেলা পুলিশের নিয়মিত মাদক বিরোধী অভিযানের ফলে জেলার শীর্ষ মাদক কারবারীদের আইনের আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে এবং জেলার আভ্যন্তরীণ মাদক সিন্ডিকেটের দৌরাত্ব বর্তমানে অনেকাংশে কমেছে।

@endsection